‘
এ এস এম সাদেকুল ইসলাম।
আমরা যখন ক্ষমতা পাই, সম্পদ পাই, রাজত্ব পাই, শাসনের ভার পাই, তখন নিজেরা জালেম হয়ে ওঠি। এটা কখনো উচিত নয় – এটা কখনো উচিত নয়, কারণ ক্ষমতা, রাজত্ব চিরস্থায়ী নয়, আমরা যতবড় বাদশাই হইনা কেনো!ক্ষমতার বড়াই করি না কেনো আমরা একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো বিধির চিরন্তন নিয়মে। যা অকাট্য, প্রমাণিত ও চির সত্য। তাহলে কেনো আমরা জুলুম করবো? যারা দুর্বল এবং মজলুম।
ভাই তার বোনের অধিকারে জুলুম করে, পিতা তার চার সন্তানের সমান অধিকার না দিয়ে জুলুম করে,
স্বামী তার স্রীর উপর জুলুম করে, সমাজপতি, জনসাধারণকে জুলুম করে, নেতা তার কর্মীদের উপরে জুলুম করে, অফিসের বস তার অধীনস্থ সহকর্মীদের উপরে জুলুম করে, শিক্ষক তার ছাত্র,ছাত্রীদের উপরে জুলুম করে, জনপ্রতিনিধি,ও জনপ্রশাসন কর্তৃক জনগণ জুলুমের শিকার হয়ে থাকে। শক্তিশালীরা দূর্বলদের উপরে জুলুম করে থাকে।
জালেমরা কী জানে না জুলুম কতবড় অন্ধকার যা আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে। তারা শোনে রাখুক সেদিন দেখতে পাবে আল্লাহর পাকরাও কতো ভয়াবহ, কতো কঠিন
যেদিন আল্লাহ জালেমদের বিচারের কাঠগড়ায় উঠাবেন।
আজ যিনি বাদশা, হয়তো কাল সে ফকির হয়ে যাবে, আজ যিনি মজলুম হয়তো পরবর্তীতে তিনি শাসক হয়ে যাবেন, এতে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় ক্ষমতা অস্থায়ী, একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই চিরন্তন ক্ষমতার মালিক, তিনি যাকে ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা ক্ষমতায় বসান, রাজত্ব দান করেন, শাসনের দায়িত্বে পরীক্ষা করে থাকেন।
আমরা কেনো বুঝিনা! আমরা ছিলাম অস্তিত্বহীন দুর্বল সৃষ্টি, আল্লাহ আমাদের পরীক্ষার জন্য, মনোনীত করে ক্ষমতার মসনদ দিয়ে থাকেন যাতে করে আমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করি,জালেম না হই, পরকাল ও পরিনতি সম্পর্কে চিন্তাশীল থাকি।
ইয়াহিয়া ইবনে মুয়াজ নামে এক বাদশা ছিলেন, রাজত্ব হারিয়ে পথের
ফকির হয়ে যায়, তার সন্তান তাকে জিজ্ঞেস করলো হে আমার পিতা আমরা আজ এমন অবস্থায় কেনো আসলাম, আমরা আগে ক্ষমতায় ছিলাম, রাজত্ব ছিলো আমাদের অধিনে, পিতা উত্তরে বললেন
হে আমার স্নেহের সন্তান, আমাদের আজ এই অবস্থা হলো, মজলুমের রাতের আহাজারি,ও আর্তনাদের ফল। আমরা তাদের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও, আল্লাহ মজলুমদের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন না।
এছাড়াও পরকালে তো ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে,
এবং কিয়ামত দিবসে পুলসিরাতের পার থেকে ডাকা হবে –
হে ক্ষমতাসীনরা- হে দুনিয়ার শাসকদের দায়িত্বশীলরা আসো!
হে জালেম দুর্ভাগারা আসো-
শপথ সেই মহান স্বত্ত্বার-যিনি মহা শক্তিধর সমস্ত রাজত্ব আদিপত্যের মালিক। সেদিন তারা পুলসিরাত পার হতে পারবে না। সেদিন তারা ব্যর্থ হবে, পুলসিরাত পার হতে পারবে না।
সেদিন সফল হবে তারাই যারা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে, ন্যায় বিচারের মাধ্যমে সঠিক ও আমানত সহকারে দায়িত্ব পালন করে “।
মন্তব্য