মোঃ আসাদুর রহমান খোকন খানসামা উপজেলার প্রতিনিধি:-
ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া:-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় খানসামা উপজেলাবাসী,
আশা করি সবাই ভালো আছেন?
১৫ জুলাই ২০২৫( মঙ্গলবার)।
আজ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে আমি হাজির হলাম। আমার লেখাটি আপনারা কিভাবে নিবেন জানি না? তবে আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আপনাদের ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতায় আমি বারবার ঋণী হয়েছি। এই কথাটি বলার খুব প্রয়োজন ছিল।
আমার একটি ভুলের জন্য আপনাদের কাছে বহুবার ক্ষমা চেয়েছি, আপনারাও আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সেই কারণেই নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিপুল ভোটে আমাকে তৃতীয় বারের মত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিলেন। যা হোক সরকারের সিদ্ধান্তে হয়তো উপজেলা পরিষদের পদটি নেই কিন্তু আপনাদের ঋণ তো আর আমার ভুলে গেলে চলবে না। তাই ইচ্ছা থাকলেও স্ব শরীরে আপনাদের সামনে হাজির হতে পারতেছি না।
কোন এক অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের কারণে আমি আজ মিথ্যা মামলার আসামি। জনগণ থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যেই আমাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে যা আমরা সকলেই জানি। ফলে দীর্ঘদিন আপনাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা কিংবা দেখা করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আপনাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে খানসামা উপজেলার চলমান পরিস্থিতিতে আমাকে দুই-একটি কথা বলতেই হচ্ছে।
আমার প্রয়াত পিতা মরহুম আকবর আলী শাহ ও আমার পরিবার সবসময় পাকেরহাটসহ পুরো উপজেলার মানুষের পাশে ছিল এবং আছে। ছয়টি ইউনিয়নের আমাদের এই ছোট্ট উপজেলা ও এর প্রায় আড়াই লাখ মানুষের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গেছি। আমি জানি না কতটুকু করতে পেরেছি? তবে সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি তা হয়তো কোনদিনও ভুলতে পারব না। কষ্ট লাগে যখন ওই সাধারণ মানুষের মুখগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠে। সাধারণ মানুষের হাসি, তাদের না বলা কথা আমি তাদের চেহারা দেখলেই অনুভব করতে পারি। সেই মানুষগুলোকে বহুদিন দেখি না। তাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে পারছি না, যেটি আমার জীবনের বড় রাজনৈতিক পরাজয়।
আমি বিশ্বাস করি, দিনাজপুর-৪ আসনের বিএনপির দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী জনাব আখতারুজ্জামান মিয়া ভাই এবং জনাব কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ভাই হয়তো তাঁরা দুইজনই চান না, তাঁদের দলের কর্মীরা একে অপরের ওপর হামলা করুক। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী নেতাকর্মীর কারণে যে হামলা ও সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। কোন পক্ষের কাছেই এমন ঘটনা কখনও কাম্য নয়।
আমরা সাধারণ মানুষ মনে করি, চলমান সংকটে সবাই যেন সহনশীলতা, ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ আচরণ বজায় রাখি। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু প্রতিহিংসা নয়।
খানসামা উপজেলার রাজনীতিতে আমাদের দুই মুরুব্বি আমিনুল হক চৌধুরী বিএসসি স্যার ও সাইফুল ইসলাম বিএসসি স্যারের অভিজ্ঞতা, মেধা ও বিচক্ষণতা আমাদের রাজনৈতিক চলার পথ সমৃদ্ধ করেছে। আমরা মনে করি খানসামা উপজেলার আজকের এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের সক্রিয় ভূমিকা সবার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।
তবে রাজনৈতিক মঞ্চে আমাদের মুরুব্বি আমিনুল হক চৌধুরী বিএসসি স্যারকে নিয়ে অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কিছু কিছু বক্তব্য আমাদের কষ্ট দেয়। এমন বক্তব্য থেকে বিরত রাখতে মঞ্চে থাকা সিনিয়র নেতাদের কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আসলেই আমার এই কথাগুলো বলা ঠিক হচ্ছে কি না কিংবা অনধিকার চর্চা হচ্ছে কি না জানি না? তবে এক সময় আমি মনে করেছিলাম রাজনীতি বিষয়ে আর কোন কথা বলব না? কিন্তু আজ বাধ্য হয়ে দুই-একটি কথা বললাম ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আমি বিশ্বাস করি আমরা খানসামা উপজেলার মানুষগুলো একে অপরের পরিচিত। আমরা সাধারণ মানুষ চাই আজকের এই পরিস্থিতিতে সবাই শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখুক।
আমার একটাই চাওয়া পাকেরহাটসহ পুরো খানসামা উপজেলা শান্তিপূর্ণ থাকুক ও রাজনীতি হোক সহনশীল।
পরিশেষে আপনারা ভালো থাকুন। সকলের প্রতি অনুরোধ আমার জন্যও দোয়া করবেন। আসুন সবাই মিলে খানসামা উপজেলা ও উপজেলার সকল মানুষকে ভালো রাখি।
মো: সহিদুজ্জামান শাহ
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান
খানসামা উপজেলা পরিষদ, দিনাজপুর
মন্তব্য