সোহেল খন্দকার(ঝালকাঠি)প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুর সদরের ৯৯ নং উঃ পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয় জন। আর এই ছয় শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত রয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক। ছয় শিক্ষার্থী আর পাঁচ শিক্ষক দিয়েই চলছে এই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষক নিজের বাসায় রেখে ব্যাবহার করছে ব্যক্তিগত কাজে। এ ছাড়াও অনিয়মের শেষ নেই এই প্রতিষ্ঠানে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলো ফাঁকা। বিদ্যালয়ে চার জন শিক্ষক উপস্থিত আছেন। সঙ্গে উপস্থিত আছে ছয় জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিতে চারজন ,চতুর্থ শ্রেণিতে একজন ও পঞ্চম শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে। একটি শ্রেণিকক্ষে দেখাযায় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দুইজন শিক্ষার্থী বসে গল্প করছেন। সেখানে নেই কোনো শিক্ষক। অপর একটি শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় শ্রেণির ৪ জন শিক্ষার্থীর পরিক্ষা নিচ্ছেন একজন শিক্ষক। দুপুর ২ টা ১৫ মিনিটের সময়ও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতায় নেয়া হয়নি হাজিরা। সাংবাদিকরা হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের হাজিরা না থাকার কারন জানতে চাইলে তাদের সামনে নিজেদের ইচ্ছেমতো হাজিরা দেয়া শুরু করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক’রা।
বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পযর্ন্ত কাগজ কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও স্থানীয়দের মতে প্রতিদিন গড়ে ১০ -১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে এই প্রতিষ্ঠানে। বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম থাকলেও তা চালু করেনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম। এমনকি বিদ্যালয়ের ল্যাপটপও প্রধান শিক্ষকের বাসায় নিয়ে রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকরা দাপ্তরিক সময় মেনে থাকেননা প্রতিষ্ঠানে। যখন খুশি তখন ছুটি দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে চলে যায় তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম জানায়,আমার প্রতিষ্ঠানে কাগজ-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী এ থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। হাজিরা খাতায় প্রতিদিন হাজিরা দেয়া হয় আজকে হয়তো কিছু খাতায় দেয়া হয় নায়। আমার একজন শিক্ষক দিয়ে সমস্যায় আছি। মাল্টিমিডিয়া পেয়েছি একমাস হয়ছে এখন পযন্ত সেট করতে পারিনায় তাই মাল্টিমিডিয়া বন্ধ।ল্যাপটপ প্রায়ই স্কুলে নিয়ে আমি কিন্তু ঈদের ছুটির পরে নিয়ে আসা হয়নি কারন আমাদের মুল্যায়ন পরিক্ষা চলে। সকলের মান-ইজ্জত আছে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জনায় প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন বলেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে সরকারি ল্যাপটপ অবশ্যই বিদ্যালয়ে থাকতে হবে।শিক্ষার্থীদের হাজিরা ক্লাস চলাকালীন সময়ে নিতে হবে। এ ছাড়াও ৯৯ নং উঃ পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিত কম সহ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রধান শিক্ষক’কে শোকজ করা হবে।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ্র জানান, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।
মন্তব্য