
সৈয়দা রাশিদা বারী
বেয়াদব মানে, আমি তো যতদূর জানি, ছোট হয়ে সম্মানিত ও মুরুব্বির সাথে কোন বিষয়ে তর্ক করলে অথবা সম্মানিতর অসম্মানিত করলে, সেটাকে বেয়াদবি করা বলে। তাহলে কোন যুক্তিতে বা আইনে পেটের ছেলের স্ত্রী, মানে পুত্রবধু শাশুড়িকে, কথায় কথায় বেয়াদব মহিলা বলে??!! একদিন দুইদিন না সব সময় বলে!!! শাশুড়ি যদি অজানতে বা না বুঝে কোন দিন কোনো বিষয়ে তর্ক করেও, পুত্রবধূর অসম্মানিত করেও, পুত্রবধূ কি তার জন্য, শাশুড়িকে ওইটা ধরে, সব সময়, বেয়াদব মহিলা বলে কথাবার্তা বলতে, যেমন তার ছোট্ট সন্তানকে বললো, এই বেয়াদব মহিলার ভাত দিয়ে আয়। অথবা বেয়াদব মহিলার পানি লাগে কতো। বেয়াদব মহিলা পানি খায় কতো। তারপরে দেখা যাচ্ছে, ভাত দিয়ে যাবার পরে, সন্তানের কাছে জিজ্ঞাসা করে, বেয়াদব মহিলা কি বললো? ভাত দিতে গেলে বেয়াদব মহিলা কিছু বলেছে?? এটা ছাড়াও, রান্নাঘর বা যেখানে সেখানে হঠাৎ দেখা হয়ে গেলে, তখন বিরাট জোরে জোরে হাড়ি পাতিল আছরায়, ট্যাপ ছেড়ে পাবি ছিটাই অথবা দরজা বিরাট শব্দ করে জোরে লাগায়! আর বলে বেয়াদব মহিলার দেখলে আমার শরীরটা জলে! মাগি বেশ্যা নির্লজ্জ বেহায়া মহিলা!!! বেয়াদব মহিলা, আমার সংসারে আমার ঘাড়ের উপরে থাকে! ওর আর একটা ছেলে আছে, সেখানে যেয়ে থাকতে পারে না? ওর এত বড় স্পর্ধা! আমার স্বামীর ওর সব দিন একবার করে দেখা লাগে? ওর ওই ছেলের দেখা লাগেনা? কিভাবে বলে, মাগি- ও এই ছেলের না দেখে থাকতে পারে না! আমার স্বামীর না দেখলে মাগির হয় না! ১২ ভাতারি খানকি মাগি। ভাতার থুয়ে দেশে দেশে বেড়াইছে। এখন আবার আমার ঘাড়ে উঠেছে। মাথায় বসেছে! ওর আমার ঘাড় থেকে নামাতে হয় কিভাবে, সেটাই আমি দেখায়া ছাড়বো। ওর জুতোর বাড়ি মেরে খেদাবো। এছাড়াও আরো ইত্যাদি। যেমন আমি জানতাম, শিক্ষক শিশুদের কান ধরে উঠবস করায়, আর বলাই আমি আর কোনদিন করবো না স্যার। দেখা যাচ্ছে কোন অন্যায় করলে, ওইটা আর করবে না, সেই প্রতিজ্ঞা পণ করাতে শিশুকালে শিক্ষক শিক্ষার্থীর এটা করায়। আর একটা জিনিসের কথা আমি শুনেছি কিন্তু দেখি নাই। নাকে খড় দেওয়া! আমি দেখি নাই তবে কিভাবে যেন আমি এই ভাষাটা ছোটকালেই শুনেছি। এ বিষয়টা বোধহয় আরো বড় রকমের অন্যায় করা হবে। তাই আমি স্কুল বা কোথাও ওই পর্যন্ত জিনিসটা দেখি নাই। কোন ধরনের অন্যায় কাজ করলে, এটা করায়, সেটাও জানি না। ওই অন্যায়টা কি পুত্রবধূর কাছেও শাশুড়ি মা করা যায়!? পুত্রবধূ যদি শাশুড়িকে বলে, এই বেয়াদব মহিলা, তুই আমার ঘাড়ের থেকে নাম!! নইলে কিন্তু তোর মানুষ ডেকে নাকে খড় দিতে হলেও, দিয়ে আমার ঘাড় থেকে নামাবো!! মাগির বাচ্চা মাগি, বেশ্যা মাগি। নির্লজ্জ বেহায়া মাগি, এত বলি লজ্জা নাই। তবুও যায় না। আরো বলে আমি আমার ছোট ছেলে খোকার ছাড়া থাকতে পারিনা। এই বেহায়া মাগি, আমার স্বামীর নিয়ে তোর এত বাহানা! তুই যদি না চলে যাস, আমার ঘাড়ের থেকে না নামিস, মানুষ ডাকে মানুষের মধ্যে তোর আমি নাকে খড় দিয়ে খেদাবো। ভালোই ভালোই না গেলে, কিভাবে বাড়ির বাইর করতে হয়, সেটা আমার জানা আছে! তুই আমার চিনিস না? সেটা তোর দেখিয়ে চিনিয়ে ছাড়বো। দুনিয়ার মানুষের হাজির করে। দুনিয়ার মানুষের সামনে আমি নাকে খড় তোর দেবো দেবো দেবো তো ছাড়বো। বলে অবশ্যই ওর আমি আমার ঘারের উপর থেকে, যে কোনভাবে সরাবো সরাবো সরাবোই। না সরাবো তো আমি অমুকের মেয়েই না। সেটা ওর নিজের মাকে নিয়ে, মায়ের সাথেই বলে। মোবাইলে বোনের সাক্ষী রেখে। বলে ওর আমি ঝাটার বাড়ি দিয়ে বাসা থেকে নামাবো। বাড়াবাড়ি করলে, ওর আমি মেরেই ফেলবো। কথার জবাব দিতে আয় এখনই মেরে ফেলবো। এমনই ইত্যাদি। একলা শাশুড়ি অসহায়, কোন অন্যায় না করে এবং কথার জবাব না দিয়ে। এখন কথা হলো কোন অপরাধ করলে, কেমন বড় অন্যায় কাজ করলে, একজন পুত্রবধূ, একজন আপন শাশুড়িকে এগুলো বলতে পারে??!! ছেলেকে একটু দেখলে, একটু কাছে পেতে চাইলে, সেটা কি খুবই বড় রকমের অন্যায়??? সমাজ বিশেষজ্ঞদের কাছে, আমার জানার জন্য প্রশ্ন রইলো। কেননা আমার জানতে খুব ইচ্ছা করছে, একজন শাশুড়ি কোন ধরনের অন্যায় করলে, শুধু তার ছেলের প্রতি একটু ভালোবাসা থাকলে, দিনে একবার একটু দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলে। তার নিজের পুত্রবধূ এইভাবে অসুস্থ শাশুড়িকে এটাক করতে পারে???!!! আর সর্বক্ষণ নানান রকম খারাপ ব্যবহার করতে পারে??? শাশুড়ির কাছে কোন মহিলার আসতে দেবে না! কাউকে রাখতে দেবে না। বলবে আমার বাড়িতে তোর কাছে কেউ আসতে পারবে না। কাউকে আসতে দিতে পারবো না। আবার এদিকে নিজেও খেদমত, সেবা যত্ন করবে না। কথাবার্তা বলবে না। বাচ্চাদেরও কাছে ভিড়তে- আসতে দেবে না। সবসময় ওই ভাবে বিচ্ছিরি ভাষায় বকবে। বাচ্চার দিয়েও অপমান করাবে। একজন পুত্রবধু কর্তৃক একজন শাশুড়ির জন্য এটা কিভাবে সম্ভব??!! বুঝলাম শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। তাহলে এই শিক্ষিতর যুগে, একজন বউ শাশুড়ি পূজারী, পুত্রের মায়ের মেরুদন্ড কি??