সন্তান যতই বড় হোক, মায়ের কাছে সে ছোট্ট শিশু

ভিশন এস টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫ । ১১:০১ অপরাহ্ণ

সৈয়দা রাশিদা বারী

সন্তান যতই বড় হোক, মায়ের কাছে সে ছোট্ট শিশু। তাই সন্তানের উপরে থাকে মায়ের অতুল প্রহরী সজাগ দৃষ্টি হরিণী কান! কেবলই সন্তানের নিরাপদ আশ্রয়, সন্তানের জীবনের সুনিশ্চিত নিরাপত্তার কামনাই! তাই মা যদি পুত্র ও পুত্রবধূর ঘরে এবং তাদের কথাবার্তা চলাফেরা মা ফলো করেন, বাংলা ভাষায় যেটাকে বলে উৎপাতা বা পাতা দেওয়া।‌ যদি মা এমন করে পুত্র এবং পুত্রবধূর ঘরে পাতা দেন। মন সজাগ, কান খাড়া, চোখ খোলা রাখেন। সেটা মায়ের অন্যায় নয়! মা কিন্তু জন্ম দেওয়া কচি শিশু থেকে, এভাবেই তার সন্তানের নিরাপত্তা বিবেচনায়, সন্তানের সব কিছুতে কান খাড়া, চোখ খোলা, হৃদয় মন প্রাণ উজাড় করে দিয়ে রেখেছেন! এমনকি খেলাধুলার মাঠ, স্কুল প্রতিষ্ঠান, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, চাকরি ক্ষেত্র, শিক্ষাক এবং চাকরি ক্ষেত্রে সন্তানের কলিগ, বয়োজ্যেষ্ঠ, চাকুলিতে সন্তানের মালিক, বস এই সমস্তদের প্রতি এবং সার্বিক সব কিছুতে মা এইভাবে পাতা দিয়ে আসছেন!!! কেউ কি সেটা লক্ষ গবেষণা করে দেখেছেন?! দেখেন নাই!? দেখেন শুধু পুত্রবধূর বেলায়?! কেন রে ভাই?! ছেলেকে ওই পর্যন্ত কে এনেছে?! পুত্রবধূ? না পুত্রের মা? সেই ২৫/ ৩০ বছরের মধ্যে তো ছেলের অমঙ্গল দুর্ঘটনা ঘটে না? আত্মহত্যা করে না ছেলে! উদাহরণ দেওয়াই যেতে পারে, এ এস পি পলাশ সাহার। নিজের অফিসে আত্মহনন স্ত্রী সুস্মিতা উড়ে এসে স্বামীর সবটুকু জুড়ে বসে, বিরক্ত করে ছেড়েছে স্বামী শাশুড়িকে! স্বামীর থেকে স্বামীর মাকে হটিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। শুধুই ব্ল্যাকমেল করত পলাশকে! বলতো: তুমি অফিসে গেলেই আমি সুইসাইড করবো! বলতো: তোমার মাকে না তাড়িয়ে আমি ভাত খাব না। গোসল করব না ঘুমাবো না। বাসা থেকে না নামিয়ে দিলে, আমি নিশ্চিত আত্মহত্যা করবো। স্ত্রী আত্মহত্যা করলে, প্রশাসনে চাকুরিরত পলাশ ফেঁসে যাবে। এই ভয়ে পলাশ বিপদ মুক্ত থাকতে নিজেই আত্মহত্যা করলো! আর ব্ল্যাকমেল করা ঝানু সেয়ানা সুস্মিতা, ঠিকই বেঁচে রইলো। পুত্রের বিবাহর আগে তখনও কিন্তু মা এমনি তদারকি ইত্যাদি করেন। তাই দুর্ঘটনায় সন্তান মারা যায় না। মা সিআইডি সেজে যখনই হোক, যেভাবেই হোক, সন্তানের সকল সেক্টর এবং কর্মক্ষেত্রের অবস্থান, মা ঠিকই জেনে নিন!!! এটা বা এমন করে। তোমরা তৃতীয় পক্ষরা মাকে সহযোগিতা করো নাই?! ছেলেকে মানুষ করার পথেও বাঁধা দিয়েছো? এখন ছেলে বউ, পুত্র এবং পুত্রবধূর সাথে সে সুখী হবে, সেখানেও তোমরা টিটি পক্ষি- তিনমুখী সাপ হয়ে, বাধা দিতে কূটনীতি করছো?!! মা জননী সন্তানকে ফলো করে, কোন কুকর্ম আনন্দ বিনোদন উপভোগ করতে বা কোন স্বার্থে নয়! শুধুই তার সন্তানের নিরাপদে রাখতে, সন্তানের একটা স্থায়িত্ব সুখ আশ্রয়, স্থায়িত্ব নিরাপত্তার কামনাই! নিরাপত্তার জন্য! এটা এমন ভাবে না উদ্ধার করলে মা বুঝবেন কেমন করে সন্তানের অবস্থান?! তার আশা ভরসা সম্বল, এতদিন ধরে মানুষ করা সন্তান, সেই সন্তানের যাপিত জীবন হঠাৎ সংসার জীবন, কেমন সেটেল হলো?? মায়ের কাছে আর সন্তানের কি লুকোবার, লুকোচুরির আছে? কেননা সন্তানের কোথায় দাগ আছে, কোথায় কেমন, সন্তানের অস্তিত্বের সব মাই তো আগে জানেন! জানেন তার রাজপুত্রের শরীর ঠিক রাখার পদ্ধতি! কোন খাবারে শরীর ভালো থাকে। কোন খাবার পছন্দ। মায়ের মত আর কেউ ভালো জানে না। মায়ের অবগতর সমান, স্ত্রীর জিন্দেগি উল্টে গেলেও হবে না। হওয়ার নয়। সেটা বোঝা দরকার। স্ত্রী অবগত থাকবে তার পেটের সন্তানের উপরে। সাত্ত্বিক হৃদয়ে চিন্তা করে গবেষণা করে দেখুন কথা ঠিক কিনা??? সারা জীবন নষ্ট করে মানুষ করা সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গর্ভে ধারণ করা মায়েরই একমাত্র দায়িত্ব। হোক সেটা স্কুল কলেজ, অফিস আদালত এবং যেকোনো মানুষের কাছে। আর স্ত্রীকে ঘিরে তো বটেই দায়িত্ব আছে। পুত্রের স্ত্রী জাহেল? নাকি পুত্রের স্ত্রী মমতাময়ী? সংসার জীবন পুত্রত্রের কেমন হবে, ওই স্ত্রীর সাথে, সুন্দর সেটল হলো কিনা? বিয়ে করানোর পূর্বে এবং পরে, মায়ের দায়িত্ব মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত, সেটা লক্ষ্য করার। লক্ষ না করলে এই যে পলাশের মত এমন দুর্ঘটনা ঘটবে! পুত্রের স্ত্রীর সাথে সুন্দর সেটেল হওয়ার পরে, লাস্ট মা জননীর কাজ, নামাজে বসে, তার সন্তান যেন বেহেস্তে যায়, সেই কামনা আল্লাহর কাছে করা! আল্লাহর কাছে তার সন্তানের জন্য বেহেশত চাওয়া। তখন তিনি প্রার্থনা করেন, হে স্রষ্টা হে আল্লাহ তুমি আমার সন্তানকে পরপারে স্বর্গ দিও! বেহেশত জান্নাত দিও! এটাই হয় একজন মায়ের লাস্ট কামনা! প্রার্থনায় কখনো মা বলেন না, আমাকে জান্নাত দিও। কিন্তু বলেন আমার সন্তানকে নিশ্চিত বেহেস্ত নসিব করিও। নিশ্চিত জান্নাত দিও!!!

আসলে মা তো এমনই হয়। তাই একজন পুত্রের স্ত্রীকে ধুয়ে পাল্টে যাচাই বাছায় করে, এবং শিখিয়ে পড়িয়ে তার সন্তানের উপযুক্ত কিনা? দেখা ও তার সন্তান পুত্রবধূর হাতে নিরাপদ কিনা? কতখানি নিরাপদ? সেটা মাকেই বুঝতে হয়! মায়ের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এই জিনিসটা বোঝা। জানা। বুঝতে হবে, ওই সন্তান কিন্তু গর্ভে ধারণ করা মায়ের। যতক্ষণ পর্যন্ত মা তার সন্তানের নিরাপদ আশ্রয়, যাচাই-বাছাই করে বিশ্বাস যোগ্য স্থাপন, অর্জন করতে না পারছেন, পুত্রবধূর হাতে বুঝে তিনি দেন না!!! না না মন থেকে দেবে না!!! সেটা বিশ্বাস কেউ করুক আর না করুক এটাই রাইট! আর ততক্ষণ স্বামীর মালিক এবং স্বামীর উপরে সম্পূর্ণ অধিকার, স্বামীর উপরে কর্তৃত্ব নেতৃত্ব দেওয়ার পাওয়ার ক্ষমতা স্ত্রীর হয় না!!! হতে পারে না। ক্রয় করলেও গৃহপালিত পশুর ও জমির, মূল মালিক থেকে, ক্রেতা দায়িত্ব বুঝে না দিলে, সেটা কিন্তু হয়না আলামত বুঝে পাওয়া! এটাও আসলে অধ্যবসায় দিয়ে বুঝতে হবে। কাজেই মামলা মোকদ্দমা ফ্যাসাদ গন্ডগোল ইত্যাদি তো সেজন্যই বাধে! বিয়ে তো হয় বাহিক রূপে। মানুষ দিয়ে দেয়! কিন্তু স্বামীকে সম্পূর্ণ পেতে, স্বামীর মায়ের থেকে বুঝে নিতে হয়। এটাই হলো আসল পাওয়া! পুত্রবধূ স্বামীর মায়ের সাথে ঘরে আসা মাত্রই ফিকশন বাধালে সেই অধিকার অর্জন করা কি হয়??? বিয়ে হয়েছে আর স্বামী সম্পূর্ণ হয়ে গেছে তা নয়। স্বামীর মায়ের থেকে পরবর্তী আর একটা দেখ ভাল কর্ম আছে, সেটাই হলো প্রকৃত একজন স্ত্রীর আসল কর্ম। মা সব সময় উপলব্ধি করতে চান, যার হাতে আমার সন্তান রেখছি, আছে অথবা পাঠাচ্ছি, পাঠিয়েছি, দিয়েছি, ওখানে ওরা সন্তানের জন্য কতখানি নিরাপদ?! হ্যাঁ মা অবশ্যই সন্তানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে চান। সে যেই হোক, প্রত্যেক মানুষের কাছে এই প্রতিশ্রুতি রাখতে, অর্জন করতে মা চান। একজন মায়ের এটাই একমাত্র প্রত্যাশা। তাই সেই আওতায়, সন্তানের স্ত্রীও পরে। এই জন্যই পুত্র পুত্রবধূর ঘরে পাতা দেন!! ওৎ পাতেন। শুধু ছেলের মা নন, মেয়ের মাও। তবে মেয়ের মাকে মেয়ে নিজে সব ধরিয়ে সহজ করে দেয়। আর ছেলে ছেলের মাকে ধরিয়ে দেয় না। বলে না তার স্ত্রী কেমন ভালোবাসে, কেমন স্বভাব, কেমন তার প্রতি সদয় ইত্যাদি। বরং লোকায়। জিজ্ঞাসা করলে বিরক্তিত হয়। এদিকে পুত্রবধূত স্বামীর মাকে বলার প্রশ্নই নাই। জিজ্ঞেস করলেই করবে মাইন্ড। তার কেবল মাইন্ড করারই জুতা আছে। আর জুত আছে দোষ ধরার। সে শাশুড়িকে প্রতিপক্ষ ভাবে। প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে। জানে যে স্বামী তার মায়ের ভালোবাসার কাছে দুর্বল। এই সুযোগটাই স্ত্রী নেয়। কিন্তু মা তো তার সন্তানের তদারকি করবেই। করতে চান। এটাতে মায়ের অন্যায় নেই। যেহেতু সন্তান যতই বড় হোক, মায়ের কাছে সে ছোট শিশু।

চেয়ারম্যান মোঃ সোহেল রানা

হেড অফিস ঢাকা মতিঝিল। E-gmail : Visionstv24@gmail.com মোবাইলঃ ০১৮১০-৫৫২৪৪৬

প্রিন্ট করুন